সিলেট ২৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২০শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি
প্রকাশিত: ৩:০২ পূর্বাহ্ণ, জুন ২৫, ২০২০
এম এ মালেক : পৃথিবীতে সবাই চিরকাল বেচেঁ থাকেনা। বেচেঁ থাকে তার কর্ম আর রেখে যাওয়া কিছু স্মৃতি। মানুষ মরণশীল কথাটি যেমন সত্য, তেমনি কিছু কিছু মৃত্যু মানুষকে কাদাঁয়।
যে মানুষটি জীবনের দীর্ঘ তিন যুগ, মানে ৩৬ বছর একই স্থানে ৪ ওলির মাজারে খাদেম হিসেবে কর্মরত ছিলেন, সেই মানুষটি গত বছর আলো আধাঁরের এই পৃথিবী থেকে বিদায় নেন চিরতরে।
সেই খাদেমের নাম মরহুম সমরাজ উদ্দিন। সিলেট সিটি কর্পোরেশনের ২৬ নং ওয়ার্ডের কদমতলীতে সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহন তিনি। যৌবনকালের টগবগে সেই যুবকটি ৩৬ বছর আগে কদমতলীর সুরমা নদীর পাড়ে চির শায়ীত ৩৬০ আওলিয়ার অন্যতম হযরত সামালাল শাহ(রঃ), হযরত আবিদাল শাহ (রঃ), হযরত রহমত শাহ (রঃ) ও হযরত দরিয়া শাহ (রঃ) গণের মাজারের খাদেম হিসেবে নিযুক্ত হন। সততা,নিষ্টা আর আদর্শের এক প্রতিক ছিলেন তিনি।
সিলেটের হযরত শাহজালাল (রঃ) কিংবা হযরত শাহ পরান (রঃ) মাজারের খাদেমদের নিয়ে বিভিন্ন সময়ে গণমাধ্যমে উঠে এসেছে স্বজনপ্রীতি বা অন্য আরো বিষয় নিয়ে প্রতিবেদন।
কিন্তু মরহুম সমরাজ উদ্দিনের জীবনদশায় তার দায়িত্বের প্রতি কিঞ্চিৎ পরিমান কোনো বিতর্কিত কিছু কেউ বলতে পারেননি। পারবেন কি করে ? সবাই অর্থের পেছনে ছুটলেও সমরাজ উদ্দিন ছিলেন, তা থেকে ভিন্ন। মাজারের অর্থের হিসাব কড়ায় গন্ডায় রাখতেন তিনি।
আজকের সুন্দর্য্যমন্ডিত মাজারের চারপাশের উন্নয়ন আর অবকাটামোর পেছনের ইতিহাসের দিকে তাকালে উঠে আসবে সমরাজ উদ্দিনের নাম। সিলেটে দরিয়া শাহ মাজারের নাম আলোকিত করার পেছনে সমরাজ উদ্দিনের পাশাপাশি আরেকজন মানুষের নাম ইতিহাসের পাতায় লিখা থাকবে। তিনিও কদমতলীর বাসিন্দা প্রয়াত আব্দুল জব্বার লালশাহ। জরাজির্ণ বিদ্যুৎবিহীন মাজার এলাকায় ১৯৭১ সালের পরেই বিদ্যুৎ লাইন এনে দিয়েছিলেন মরহুম আব্দুল জব্বার লালশাহ। যার নামে এখনো বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে বিদ্যুৎ বিল আসে। শুধু বিদ্যুৎ নয়, মাজারের প্রধান ফটক ও খাদেম ঘর নির্মাণ করে দিয়েছিলেন তিনি। বর্তমানে খাদেম ঘরের জায়গায় মসজিদ বিদ্যমান। সেই মরহুম আব্দুল জব্বার লালশাহ’র ছেলে সিলেটের সাংবাদিক সমাজের পরিচিত মুখ এম এ মালেক।
মরহুম সমরাজ উদ্দিনের পরিবার পরিচিতি : মরহুম সমরাজ উদ্দিন মরহুম আইন উল্লাহ’র ছেলে। সমরাজ উদ্দিনের ৭ ভাইয়ের মধ্যে তিনি ছিলেন ২য়। সবার বড় ভাই সিরাজ উদ্দিন দীর্ঘদিন প্রবাস জীবন কাটিয়ে দেশে আসার কয়েক বছরের মাথায় তিনিও পাড়ি জমান পরপারে। ৩য় ভাই নুরুদ্দিন ও নেই। আরেক ভাই সাবেক ছাত্রনেতা ও সাবেক ২৬ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী বেলাল আহমদ বিলাল ও নেই।
বর্তমানে ৭ ভাইয়ের মধ্যে ৩ ভাই জীবিত। তারা হলেন, ব্যবসায়ী জলাল আহমদ, যুবলীগ নেতা ও ব্যবসায়ী আকতার উদ্দিন এবং সবার ছোট আফছার উদ্দিন উরফে আফছর।
মরহুম সমরাজ উদ্দিনের কর্ম তৎপরতা : ৩৬ বছর তিনি মাজারের খাদেম হিসেবে দায়িত্ব পালন করলেও মাজারের একটি টাকাও পরিবারের জন্য খরচ করেননি। তার জলন্ত প্রমাণ, মৃত্যুর পর তিনির ভাই আকতার একটি টিনের বক্স এনে দিয়েছিলেন বর্তমান মাজার কমিটির হাতে। সেই ছোট্র বক্সে পাওয়া গেলো প্রায় ৩০ হাজার টাকার উপরে। জীবিত থাকাবস্থায় মাজারের সব হিসেব তিনি মাজারের সাবেক সেক্রেটারি ও বর্তমান সভাপতি কদমতলী বড় বাড়ির বাসিন্দা হাজী সমরাজ মিয়ার কাছে দিয়ে গেছেন।
যে মানুষটি কোনোদিন টাকার লোভ করেননি। সেই মানুষটি ছিলেন মাজারের খেদমতে ব্যস্ত। মৃত্যুর পর মাজার প্রাঙ্গনে তাঁকে চির শায়ীত করা হয়। ২০১৯ সালের ৭ জুলাই ৪ জিলহজ¦ তিনি মৃত্যুবরণ করেন। সেই হিসেবে আগামীকাল শুক্রবার ৪ জিলহজ¦ তিনির ১ম মৃত্যুবার্ষিকী। মৃত্যুবার্ষিকীতে নেয়া হয়েছে বিভিন্ন কর্মসূচি। পবিত্র কোরআনে খতম, মিলাদ মাহফিল আর শিরনী বিতরণ করা হবে বলে জানান মরহুম সমরাজ উদ্দিনের ছোট ভাই আকতার ও আফছর।
প্রধান উপদেষ্টা : আবুল মাল আব্দুল মুহিত
উপদেষ্টা : ড. এ কে আব্দুল মোমেন (এমপি)
উপদেষ্টা : ড. আহমদ আল কবির
প্রকাশক : আলম খান মুক্তি
প্রধান সম্পাদক : বিলাল খান
সম্পাদক : মোবারক হোসেন পাপ্পু
বার্তা সম্পাদক : সাকারিয়া হোসেন সাকির
অফিস : ১/৬ নবীবা কমপ্লেক্স, আম্বরখানা সিলেট। মোবাইল নং-০১৭১৬-৩৮৭৫৩২
সম্পাদক-০১৭১২-৭৪৫২৬৭
০১৭১০-১৩০৪১১
ইমেইল : alokitosylhet24@gmail.com
Design and developed by web-home-bd