শাহপরাণ মাজার ও খাদিমদের নিয়ে অপপ্রচারের নিন্দা

প্রকাশিত: ১২:৩০ পূর্বাহ্ণ, এপ্রিল ২৬, ২০২১

শাহপরাণ মাজার ও খাদিমদের নিয়ে অপপ্রচারের নিন্দা

৩৬০ আউলিয়ার অন্যতম সহযোগী হযরত শাহপরাণ (রহ.) মাজার ও খাদিমদের নিয়ে অপপ্রচার এর নিন্দা জানানো হয়েছে। রোববার ( ২৫ এপ্রিল) হযরত শাহপরাণ মাজার ওয়াক্ফ স্টেট ইসি নং ১৩৬৫১ মোতাওয়াল্লির সৈয়দ মামুনুর রশিদ।

এক বিজ্ঞপ্তিতে তিনি জানান, দীর্ঘ দিন থেকে মাজারের জায়গা দখলের চেষ্টা ও চাঁদা দাবি করে আসছে একটি পক্ষ। ওই পক্ষ জায়গা দখলে ব্যর্থ হয়ে এবং চাঁদা না পেয়ে গত ১৩ এপ্রিল মাজার ও খাদেমদের উপর হামলা চালিয়ে মসজিদের দান বাক্স ভেঙ্গে ও গদ্দিঘরে হামলা চালিয়ে ভাংচুর ও লুটপাট করে ( এ ঘটনার সিসি টিভি ফুটেজ রয়েছে)।

শাহপরাণ (রহ.) মাজারে ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি, হামলা ও লুটপাট ঘটনায় ৬ জনের বিরুদ্ধে শাহপরাণ থানায় অভিযোগ দাখিল করলে, পুলিশ প্রাথমিক তদন্তে সত্যতা পেয়ে ( মামলা নম্বর ১২ (০৪)২১ইং) রুজু করেন। এ মামলায় আসামীরা হলেন, লালখাটঙ্গি গ্রামের আব্দুল খালিকের ছেলে বেলাল আহমদ, ফজল মিয়ার ছেলে বদরুল ইসলাম, গৌছ উদ্দিন পাখির ছেলে ইমন আহমদ, মৃত ফজল মিয়ার ছেলে তাজুল ইসলাম তাজ, নজমুল ইসলাম ও আনোয়ার হোসেনের ছেলে আলী সহ অজ্ঞাতনামা আরো ১৫/২০ জন।

ওই মামলা থেকে বাঁচতে ও প্রকৃত ঘটনা আড়াল করতে মামল্রা আসামীরা ও তাদের সহযোগি এবং বাহিনীর লোকজন নানাভাবে অপপ্রচার চালাচ্ছে। আর তাদের নিজস্ব লোকদের দস্তখত এবং এলাকাবাসির দস্তখত জাল করে বিভিন্ন জায়গা মিথ্যে কল্পকাহিনী সাজিয়ে সম্পূর্ণ মিথ্যেভাবে লিখিত দিয়ে তা বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচার করে অপপ্রচার চালাচ্ছে। এতে করে হযরত শাহপরাণ (রহ.) মাজার, ভক্ত-আশেকান, খাদিম, মাজার কর্তৃপক্ষের ব্যাপক সম্মান হানি ও সামাজিক এবং আর্থিকভাবে ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। তাই এসকল অপপ্রচারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হচ্ছে। আর ভবিষত্যে এধরণের কোন সংবাদ পেলে তা যাচাই-বাচাই করে সঠিক ঘটনা প্রচার ও প্রকাশের জন্য অনুরোধ করা হইল।

উল্লেখ্য, গত সোমবার (১৯ এপ্রিল) মাজার, মসজিদ-মাদ্রাসায় চাঁদাবাজ, দুষ্কৃতিকারী, সন্ত্রাসী ও ভূমিখেঁকোদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার বরাবরে আবেদন করেন মাজারের খাদিম, মোতওয়াল্লি ও কর্তৃপক্ষ।

আবেদনে উল্লেখ করা হয়, মাজারের পরিবেশ বিনষ্ট এবং আগত ভক্ত-আশেকানগণকে হয়রাণি করে যাচ্ছে স্থানিয় চাঁদাবাজ ও দুষ্কৃতিকারী চক্র। এ বিষয়ে ২০২০ সালের ২৬ জানুয়ারি হযরত শাহপরাণ (রহ.) দরগা ওয়াক্ফ কমিটির পক্ষ থেকে ওয়াক্ফ প্রশাসক বাংলাদেশ বরাবরে ৭৭৭৭ নম্বর ডায়রিতে লিখিত আবেদন করলে বাংলাদেশ ওয়াক্ফ স্টেট তদন্ত সাপেক্ষে ঘটনার সত্যতা পেয়ে ওয়াক্ফ প্রশাসক, বাংলাদেশের অতিরিক্ত সচিব এস,এম, তারিকুল ইসলাম ২০২০ সালের ২৭ জুলাই ( স্মারক নং: ওঃপ্রঃসিঃ সুঃ/২৬ (১)) আদেশে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার বরাবরে পত্র প্রেরণ করেন। এতে মাজারে আগতদের সার্বিক নিরাপত্তা ও মাজারে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারিদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের কথা উল্লেখ করা হয়।

এরপূর্বে ২০০৯ সালের ৫ জুলাই বদরুল ইসলাম গং খাদিমদের মধ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার লক্ষে ও মোতওয়াল্লী নিয়ে সম্পূর্ণ মিথ্যে বর্ণনায় বাংলাদেশ ওয়াক্ফ স্টেট বরাবরে ৪ টি পৃথক দরখাস্থ দাখিল করেন। ওই দরখাস্থগুলো শুনানী শেষে ২০১৩ সালের ২৩ ডিসেম্বর আদেশে উল্লেখ করেন, উভয় পক্ষের সক্ষ্য, জেরা জবাব এবং উপস্থাপিত কাগজপত্র পরিক্ষা ও পর্যালোচনান্তে মোতওয়াল্লী সৈয়দ মামুনুর রশীদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সন্দেহহতীতভাবে প্রমানিত না হওয়ায় তার বিরুদ্ধে মোতওয়াল্লীর পদ থেকে অপসারণের আবেদন না-মঞ্জুর করা যেতে পারে। এছাড়া মাজারের কবরস্থানসহ টিলার জায়গা দখলের জন্য মৃত তমিজ উদ্দিনের ছেলে মো. গৌছ উদ্দিন পাঁখি মেম্বার জাল কাগজ সৃষ্টি করে সম্পূর্ণ মিথ্যা বর্ণনায় অতিরিক্ত সহকারী জজ আদালত, সিলেটে স্বত্ত মোকদ্দমা নং ৫৬/৯৫ ইং দাখিল করে। মামলাটি দীর্ঘদিন শুণানী শেষে আদালত কোন সত্যতা না পেয়ে ২৩/০৮/১৯৯৮ ইং সালে খারিজ করেন।

বেলাল ও বদরুল বাহিনীর কার্যকলাপে ৩৬০ আউলিয়ার অন্যতম সফরসঙ্গী হযরত শাহপরাণ (রহ.) দরাগাহ শরীফ, মসজিদ ও মাদ্রাসার সুশৃঙ্খল পরিবেশ বিনষ্ট হচ্ছে। তাছাড়া প্রতিনিয়তই মাজার প্রাঙ্গণে নানা ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটাচ্ছে ওই বাহিনী। বেলাল ও বদরুল বাহিনীর কারণে মাজারে আগত ভক্ত-আশেকানগণ এবং মাজার, মসজিদ ও মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।  তাই মাজারে পরিবেশ এবং শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানানো হয়।  প্রেস-বিজ্ঞপ্তি

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ