বড়লেখায় টাকা আত্মসাতের জন্য ছিনতাই গল্প সাজান দোকান কর্মচারী

প্রকাশিত: ৯:২২ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১৩, ২০১৯

বড়লেখায় টাকা আত্মসাতের জন্য ছিনতাই গল্প সাজান দোকান কর্মচারী

 আলোকিত সিলেট ডেস্ক :::  মৌলভীবাজারের বড়লেখা শহরের আয়শা ট্রেডার্সের কর্মচারী অনুপম দত্ত যিশু। ছিলেন প্রতিষ্ঠানটির মালিকের বিশ্বস্ত কর্মচারী। বিভিন্ন সময় প্রতিষ্ঠানের বড় অঙ্কের টাকা ব্যাংকে জমা দিতে হয় তাকে। হঠাৎ টাকার মোহ পেয়ে বসে যিশুকে। পরিকল্পনা করেন টাকা আত্মসাতের। পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানের ৪ লাখ ৬০ হাজার টাকা ছিনতাইয়ের মিথ্যা গল্প তৈরি করেন। কিন্তু ওই গল্প বেশিদূর নিতে পারেননি। পুলিশের জেরার মুখে ছিনতাই গল্প সাজিয়ে নিজেই ওই টাকা আত্মসাৎ করতে চাওয়ার কথা স্বীকার করেন অনুপম দত্ত যিশু ।

সোমবার (১১ নভেম্বর) এ টাকা আত্মসাতের ঘটনা ঘটে। টাকা আত্মসাতের ঘটনার মূল তথ্য উদঘাটন হয় মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) বিকেলে। এই ঘটনায় গ্রেপ্তার হয়েছেন দোকান কর্মচারী অনুপম দত্ত যিশু ও তার সহযোগী স্বপন দত্ত। দুজনকে বুধবার (১৩ নভেম্বর) আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।

পুলিশ ও ব্যবসায়ী সূত্রে জানা গেছে, বড়লেখা পৌর শহরের আয়শা ট্রেডার্সের মালিক মাহবুবুর রহমান গত সোমবার বিকেলে তার দোকানের কর্মচারী অনুপম দত্ত যিশুকে ৬টি চেক দেন। যিশু তিনটি চেক দিয়ে পূবালী ব্যাংক ও ডাচবাংলা ব্যাংকের শাখা থেকে ৪ লাখ ৬০ হাজার টাকা উত্তোলন করেন। কথা ছিল ব্যাংক থেকে এই টাকা তুলে এনসিসি ব্যাংক বড়লেখা শাখায় গিয়ে মালামাল কেনার জন্য নির্দিষ্ট কোম্পানির নামে টিটি করার। কিন্তু অনুপম দত্ত টাকা উত্তোলন করার পর তা টিটি না করে ছিনতাইয়ের গল্প তৈরি করেন।

দোকান মালিককে তিনি (অনুপম দত্ত) জানান, টাকা উত্তোলন শেষে এনসিসি ব্যাংকে যাওয়ার পথে একদল ছিনতাইকারী প্রাণে মারার ভয় দেখিয়ে জোর করে তাকে একটি কালো রঙের মাইক্রোবাসে তুলে নেয়। এরপর মারধর করে উপজেলার দক্ষিণভাগ দক্ষিণ ইউনিয়নের হাতলিঘাট এলাকায় ফেলে যায়। রাতে আহত অবস্থায় কোনোরকম সেখান থেকে বড়লেখা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে ভর্তি হয়েছেন।

খবর পেয়ে দোকান মালিক মাহবুবুর রহমান ঘটনাটি পুলিশকে জানান। পরদিন মঙ্গলবার সকালে বড়লেখা থানায় অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে একটি ছিনতাই মামলা করেন।

এদিকে পুলিশ ছিনতাইয়ের বিষয়ে অনুপম দত্তকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে, তার কথার মধ্যে নানা অসঙ্গতি ধরা পড়ে। এতে পুলিশের সন্দেহ বাড়ে। ধারাবাহিক জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে দোকান কর্মচারী টাকা আত্মসাতের লক্ষ্যে ছিনতাইয়ের গল্প তৈরির কথা স্বীকার করেন। পরে তার দেওয়া তথ্যমতে মঙ্গলবার বিকেলে উপজেলার বারইগ্রামে স্বপন দত্তের বাড়ির একটি অব্যবহৃত স্নানঘরে বালতির মধ্যে একটি শপিং ব্যাগে রাখা টাকার পুরোটাই উদ্ধার করা হয়। এরপর পুলিশ দুজনকে গ্রেপ্তার করে। দুজনকে বুধবার (১৩ নভেম্বর) আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে বড়লেখা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইয়াছিনুল হক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বুধবার বলেন, ‘তার (অনুপম দত্ত) কথা মতো সে যত স্থানের কথা বলেছে, সবকটি স্থানে তাকে নিয়ে গিয়েছি। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখা হয়েছে। তার কথার মধ্যে কোনো সঙ্গতি পাওয়া যায়নি। একপর্যায়ে টাকা আত্মসাতের জন্য ছিনতাইয়ের ঘটনাটি সাজানোর কথা স্বীকার করে। এরপর টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। দুজনকে বুধবার আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।’

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ