জালালপুরে আলকাছের জালিয়াতি প্রতারনায় ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী

প্রকাশিত: ৬:৩২ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ২, ২০২০

জালালপুরে আলকাছের জালিয়াতি প্রতারনায় ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী

ডেস্ক রিপোর্ট :: এক বীর মুক্তিযোদ্ধার লীজ বন্দোবস্ত জমি হাতিয়ে নেয়ার অপতৎপরতায় তোলপাড় চলছে দক্ষিণ সুরমার জালালপুর ইউনিয়নের মোকামদোয়ারে। মুক্তিযোদ্ধা গাজী সিকন্দর আলীর পরিবারকে এভাবে হয়রানী করছেন জালালপুর ইউনিয়নের সাবেক ওয়ার্ড সদস্য আলকাছ আলী। আলকাছের এহেন ঘটনা নতুন নয়, ইতিপূর্বে সে এক ইটালী প্রবাসীর পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেটে থানা পুলিশের স্বাক্ষর জালিয়াতির ঘটনায় আটক হয়েছিল আলকাছ আলী।

স্থানীয় সূত্র জানায়, দক্ষিণ সুরমার জালালপুর ইউনিয়নের সাবেক ওয়ার্ড সদস্য আলকাছ আলী। ইউপি সদস্য থাকাবস্থায় ২০০১ সালে দক্ষিণ সুরমা পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন তিনি। অভিযোগ ছিল, দীর্ঘদিন ধরে থানা পুলিশ সহ সরকারী বিভিন্ন অফিস আদালতের কর্মকর্তাদের স্বাক্ষর জাল করে সাটির্ফিকেট দিয়ে মানুষের সঙ্গে প্রতারনার। এমনকি তার মোকামদোয়ার গ্রামের আব্দুস সোবহানের ইটালী প্রবাসী ছেলে কাপ্তান মিয়া পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সাটির্ফিকেটের জন্য সহায়তা চেয়েছিলেন আলকাছ আলীর। চার হাজার টাকা কাপ্তান মিয়ার নিকট থেকে ঘুষ নিয়ে দক্ষিণ সুরমা থানার একটি পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সাটির্ফিকেট প্রদান করেন আলকাছ। কিন্তু এ সার্টিফিকেট নিয়ে সন্দেহে পড়েন কাপ্তান মিয়া। অতপর তিনি সত্যতা যাচাইয়ে তৎকালীন দক্ষিণ সুরমা থানার ভারপ্রাপ্ত ইনচার্জ শফিুকল ইসলাম মুকুলের কাছে যান কাপ্তান মিয়া। ভারপ্রাপ্ত ইনচার্জ তার নিজের স্বাক্ষর জাল দেখে নিজে বাদী হয়ে একটি মামলার দায়ের করে আলকাছ মিয়াকে গ্রেফতার করে দক্ষিণ সুরমা থানা পুলিশ। কিন্তু তারর্পও জালজালিয়াতি প্রতারনা বন্ধ হয়নি আলকাছের। সম্প্রতি স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধা গাজী সিকান্দরের লীজকৃত একটি মূল্যবান জমির বন্দোবস্ত বাতিলে গোপনে দরখাস্ত করে হাতিয়ে নেয়ার পাঁয়তারা করেন আলকাছ মিয়া। এর মধ্যে দিয়ে মুক্তিযোদ্ধার পরিবারকে হয়রানী শুরু করেন তিনি। এঘটনায় স্থানীয় পঞ্চায়েত কমিটি বিষয়টি নিয়ে একটি বৈঠকে বসেন ২০১৮ সালে শেষের দিকে। আব্দুল ইসলামের সভাপতিত্বে এ বৈঠকে আলকাছ বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাব গ্রহন করেন স্থানীয় মরুব্বিয়ানরা। এসময় মুরব্বিরা মুক্তিযোদ্ধা গাজী সিকন্দরের বন্দোবস্তকৃত জমিটির ব্যাপারে আলকাছ আলীর আদেবদন প্রত্যাহারের নির্দেশ দেয়া হয়। কিন্তু সেই নির্দেশ অমান্য করায় গ্রামের বিচার আচারে কেউ যেন আলকাছ আলীকে না ডাকেন সেই সিদ্ধান্ত গ্রহন করেন বিজ্ঞ মুরব্বিরা।
এব্যাপারে মুক্তিযোদ্ধা গাজী সিকন্দরের ভাতিজা আলী আহমদ বলেন, তার এহেন তৎপরতায় আমরা খুব বিব্রত ও হয়রানীর শিকার হয়েছি। জাল-জালিয়াতি তার নেশা পেশা। সে সমাজের সহজ সরল মানুষকে ঠকিয়ে সর্বশান্ত করছে মানুষকে। সামাজিকভাবে বারবার বিচার পঞ্চায়েত করেই দমানো যাচ্ছে না তাকে। তিনি বলেন, প্রতিহিংসা ও প্রতিশোধের নেশায় এসব এখন তার অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। সে একজন মহান মুক্তিযোদ্ধার জমি হাতিয়ে নেয়ার পাঁয়তারা করছেন প্রকাশ্যে। সামজিক প্রতিরোধে তার এ তৎপরতা বন্ধ হলেও বিভিন্নভাবে কূটচাল চালিয়ে অব্যাহত রাখছে হয়রানীর চেষ্টা। স্থানীয় সূত্র জানায়, কার্যত মুহুুরী না হলেও মুহুরী পরিচয় দিয়ে মানুষকে প্রতারিত করার বিস্তর অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। সম্প্রতি নামজারী করে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে স্থানীয় বাদেশপুর গ্রামের রনি মিয়ার নিকট থেকে ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা আতœসাত করে। স্থানীয় মৎসজীবি সম্প্রদায়ের কবরস্থানের ৯শতক ভূমি দখলে নিতে প্রক্রিয়া চালায় আলকাছ। এনিয়ে অসন্তোষ দেখা দেয় স্থানীয় জনগোষ্টীর মধ্যে। পরে তাকে কবরস্থানের দখলচ্যুত করেন এলাকাবাসী।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ